Site icon নীলফামারী জিলাইভ | truth alone triumphs

নীলফামারী জাল সনদে মাদ্রাসায় চাকরি করছেন ১০বছর

নীলফামারীর পঞ্চপুকুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় এক কর্মচারী ১০ বছর ধরে জাল সনদে মাদ্রাসায় চাকরি করে আসছেন। তুলছেন নিয়মিত বেতন ভাতাও। অভিযোগ উঠেছে তৎকালীন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হামিদুল ইসলাম মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জাল সনদে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে ২০১৪ সালে জামাত আলীকে নিয়োগ দেন।

 

নীলফামারী জাল সনদে মাদ্রাসায় চাকরি করছেন ১০বছর

 

ওই সনদ দিয়েই অধ্যক্ষ তার ইনডেক্স তৈরিতে সহায়তা করেন। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রতিমাসেই তুলছেন বেতন-ভাতা। অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই কর্মচারির প্রকৃত নাম জামাত আলী। চাকরি নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে জামান আলী উল্লেখ করেন। জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম-নিবন্ধনে তার নাম রয়েছে জামাত আলী।

এমনকি তার এলাকার স্থানীয়রাও তাকে জামাত আলী বলেই চিনেন। চাকরি নেওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম-নিবন্ধন ইডিট করে জমা দেয়া হয়। কিন্তু অনলাইনে সার্চ দিয়ে দেখা যায় সেখানে তার নাম জামাত আলীই রয়ে গেছে। চাকরিতে প্রবেশের জন্য অষ্টম শ্রেণী পাশের যে সার্টিফিকেট তিনি প্রদান করেন সেটিও ভুয়া।

 

 

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, পঞ্চপুকুরের দারুল হুদা উচ্চবিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিষ্টারেও তার নাম উল্লেখ রয়েছে জামাত আলী। তবে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া অষ্টম শ্রেণী পাশের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রে নাম উল্লেখ করা হয় জামান আলী। এছাড়াও দেখা যায় ওই বিদ্যালয়ে জামাত আলী ১৯৯৭ সালে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হলেও সপ্তম শ্রেণী না পড়েই ১৯৯৮ সালে তাকে অষ্টম শ্রেণী পাশের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র দেওয়া হয়। তার জাতীয় পরিচয় পত্রে ১৯৭২, জন্মনিবন্ধনে ১৯৮৪ এবং বিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিষ্টারে ১৯৮৩ জন্মসাল লেখা রয়েছে।

দারুল হুদা উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন,‘আমাদের বিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিষ্টারে তার নাম রয়েছে জামাত আলী। সে ১৯৯৭ সালে অত্র প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। আমি কিছুদিন হলো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। সেসময় জামান আলী নাম দিয়ে ১৯৯৮ সালে অষ্টম শ্রেণী পাশের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ কিভাবে তাকে প্রদান করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কোন কিছু বলতে পারবো না।

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

জাল সনদ দিয়ে চাকরি নেওয়ার বিষয়ে জামাত আলীর সঙ্গে একাধিকবার মাদ্রাসায়,তার বাড়ীতে এবং মুঠোফোনে যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি তাকে। অভিযোগের বিষয়ে পঞ্চপুকুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষ মো.আসাদুজ্জামানের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গভর্নিং বডির সভাপতি আশরাফুল হক বলেন,ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার হাফিজুল ইসলাম বলেন, জাল সনদ দিয়ে চাকরি করার সুযোগ নেই। যদি এটি হয়ে থাকে তাকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নেওয়া সব বেতন ফেরত দিতে হবে। সাথে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

আরও পড়ুন:

Exit mobile version